নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনায় সাধারণ মানুষ কোনো চিকিৎসা পাচ্ছে না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই রোগী মারা যাচ্ছে। চারদিকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। সিএনজি বা অ্যাম্বুলেন্সে স্ত্রীর কোলেই স্বামীর মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। শনিবার সকালে দলের পক্ষ থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শুধু ভিআইপি ও সরকার দলীয় লোকেরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন। তিনি বলেন, দেশে একটি ভেন্টিলেটর, একটি আইসিইউ বেড ও একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য হাহাকার চলছে। মানুষের আহাজারিতে দেশের আকাশ ভারী হয়ে উঠছে।
খোদ রাজধানী ঢাকায়ই নয় বরং দেশের অনেক জেলায় লাশ দাফন করার জায়গা নেই। শুধু রাজধানীর কবরস্থানগুলোতে গত চার মাসে লাশ দাফন হয়েছে দুই-তৃতীয়াংশ বেশি। আর নারায়ণগঞ্জে এ সংখ্যা দ্বিগুণ। বিএনপি মহাসচিব তার বক্তব্যে জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত সারা দেশে বিএনপির ৫৬ জন নেতাকর্মী মারা গেছেন। আর এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন দলের ১২১ জন নেতাকর্মী।
ফখরুল বলেন, সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতায় করোনাভাইরাসে দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যুর মিছিল চলছে। সরকারের চরম অবহেলা ও দায়িত্বহীন আচরণে দেশে কোভিড-১৯ ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারি হিসাবে দেশে মৃত্যু হাজার ছাড়িয়েছে, আক্রান্ত প্রায় লাখের কাছে। বেসরকারি বা অন্যান্য সূত্রে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। শুরু থেকেই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামতকে উপেক্ষা করে লকডাউনের পরিবর্তে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে জনগণের সঙ্গে তামাশা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের আক্রমণে বিশে^র অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশও বিপর্যস্ত। বাংলাদেশে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি ঊর্ধ্বমুখী ও বিপজ্জনক পর্যায়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে বিশে^র সর্বোচ্চ সংক্রমিত ১০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ অবস্থান নিয়েছে। করোনা ঝড়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। হু হু করে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। সরকারি প্রেসনোটে প্রতিদিন যে খবর প্রকাশিত হচ্ছে বাস্তবতার সঙ্গে তার কোনো মিল নেই। সরকারি ভাষ্য মানুষ বিশ^াস করে না।
ফখরুল বলেন, প্রতি বছরই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বাজেটে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকে। এই বরাদ্দের টাকা দিয়ে যদি স্বাস্থ্য খাতের উন্নতি করা হতো তাহলে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় দেশ মুখ থুবড়ে পড়ত না। সত্যিকার অর্থে করোনা মোকাবিলায় সমন্বিত কোনো কাজ করেনি সরকার।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জাতীয় করোনা পর্যবেক্ষণ সেলের আহ্বায়ক ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহামুদ টুকু ও করোনা সেলের সদস্য দলের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন যুক্ত ছিলেন।